মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
মেশকাত শরীফের পরিচয়ঃ
মুহাদ্দেস ওলীউদ্দীন আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ্ ওরফে খতীব তাবরেযীর এই "মেশকাতুল মাসাবীহ' আসলে মুহাদ্দেস মুহীউস সুন্নাহ বাগাবীর 'মাসাবীহুসসুন্নাহ্' কিতাবেরই বর্ধিত সংস্করণ। (বিস্তারিত বিবরণের জন্য হাদীসের তত্ত্ব ও ইতিহাস' গ্রন্থের ১০০ পৃষ্ঠায় মাসাবীহ্ প্রসঙ্গ দেখুন।) মাসাবীহতে মোট ৪৪৩৪টি হাদীস রহিয়াছে, আর মেশকাতে রহিয়াছে ৬ হাজার হাদীস। ইহাতে ছেহাহ ছিত্তার প্রায় সমস্ত হাদীস এবং উহাদের বাহিরেরও অনেক হাদীস স্থান লাভ করিয়াছে। এক কথায়, মেশকাত শরীফ হাদীসের একটি নির্ভরযোগ্য বিরাট সংকলন। মুসলিম জাহানে ইহা অসামান্য সমাদর লাভ করিয়াছে। মুসলিম জাহানের এমন কোন স্থান নাই, যেখানে ইহা শিক্ষা দেওয়া হইতেছে না। মুহাদ্দেসগণ ইহার বহু আলোচনা করিয়াছেন এবং বহু মুহাদ্দেস ইহার উপর বহু শরাহ লিখিয়াছেন। এমন কি স্বয়ং খতীবের উস্তাদ, বিখ্যাত মুহাদ্দেস তীবী পর্যন্ত ইহার এক শরাহ লিখিয়াছেন। নীচে ইহার কতিপয় প্রসিদ্ধ শরাহের নাম করা গেল।
মেশকাত শরীফের শরাহ :
১। শরহে মেশকাত — মুহাম্মদ হোসাইন ইবনে আবদুল্লাহ্ তীবী(মৃঃ ৭৪৩ হিঃ)। ইহার নাম 'আল কাশেফ' (الكاشف) । ইহা মেশকাতের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ শরাহ।
২। শরহে মেশকাত – সৈয়দ শরীফ জুরজানী। ইহা তীবীর শরাহর সার-সংক্ষেপ।
৩। শরহে মেশকাত— মোল্লা আলী তারেমী আকবরাবাদী (মৃঃ ১৮১ হিঃ)।
৪। শরহে মেশকাত—মোল্লা আলী কারী : শায়খ নূরুদ্দীন আলী ইবনে সুলতান মুহাম্মদ হারাবী (মৃঃ ১০১৪ হিঃ)। ইহার নাম 'মেরকাতুল মাফাতীহ (مرقاة المفاتيح)। ইহা অতি বিশদ ও বিখ্যাত শরাহ।
৫। শরহে মেশকাত—শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলবী (মৃঃ ১০৫২ হিঃ)। ইহার নাম 'লুমআত' (لمعات التنيح) । ইহাও মেশকাতের একটি বিখ্যাত ও বিস্তারিত শরাহ।।
৬। শরহে মেশকাত—ঐ। ইহার নাম 'আশে অ্যাতুললুম'আত (أشعة اللمعات) | ইহা 'লুম'আতেরই সার-সংক্ষেপ। ইহা পারসী ভাষায় লিখিত। ইহাতে তিনি প্রথমে প্রত্যেক হাদীসের পারসী ভাষায় তরজমা করিয়াছেন। অতঃপর অতি সংক্ষেপে মুতাকাদ্দেমীনদের মতামতের সার বর্ণনা করিয়াছেন। ইহা 'মেশকাতের' একটি মূল্যবান শরাহ। আমার অনুবাদ ও ব্যাখ্যায় আমি বেশীরভাগ ইহারই অনুসরণ করিয়াছি।
৭। শরহে মেশকাত—শায়খ মুহাম্মদ সাঈদ ইবনে ইমামে রব্বানী ওরফে 'খাযিনুর রহমত' (মৃঃ ১০৭০ হিঃ)।
৮। শরহে মেশকাত—শায়খ ইমামুদ্দীন মুহাম্মদ আরেফ ওরফে আবদুন্নবী শাত্তারী আকবরাবাদী (মৃঃ ১১২০ হিঃ)। ইহার নাম 'যরীআতুন নাজাত (ذريعة النجاة) ।
৯। শরহে মেশকাত—নওয়াব কুতবুদ্দীন খাঁ দেহলবী (মৃঃ ১২৭৯ হিঃ)। ইহার নাম "নাযাহেরে হক"। ইহাতে তিনি প্রথমে প্রত্যেক হাদীসের উর্দু তরজমা করিয়াছেন। অতঃপর শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলবীর আশে অ্যাতুল লুমআতের আলোচনার উর্দু অনুবাদ ও তাহার উস্তাদ হযরত শাহ ইসহাক দেহলবীর আলোচনার সার উল্লেখ করিয়াছেন। 'মাওলানা' অর্থে তিনি শাহ সাহেবকেই বুঝাইয়াছেন।
১০। শরহে মেশকাত — মাওলানা ইদ্রীস কান্দলবী (জীবিত)। ইহার নাম 'তা'লীকুস সাবীহ (تعليق الصبيح) । ইহা আরবী ভাষায় লিখিত একটি বিস্তারিত শরাহ।
মেশকাত শরীফে যেসকল ইমামের বরাত রহিয়াছে।
ইঁহাদের মধ্যে—১। ইমাম মালেক, ২। শাফেয়ী, ৩। আহমদ ইবনে হাম্বল, ৪। বুখারী ৫। মুসলিম, ৬। আবু দাউদ, ৭। তিরমিযী, ৮। নাসায়ী ও ৯। ইমাম ইবনে মাজাহ—এই ৯ জনের পরিচয় “হাদীসের তত্ত্ব ও ইতিহাস" দ্রষ্টব্য। বাকী কয়জনের পরিচয় নিম্নে দেওয়া গেল।
১০। ইমান দারেমী (র:) [১৮১–২০৫ হিঃ মোঃ ৭১৮-৮৬১ ইং)
ইমাম আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান সমরকন্দী দারেমী (বর্তমান সোভিয়েট ইউনিয়নের উজবেকিস্তানের অন্তর্গত) সমরকন্দ নামক প্রাচীন নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এলমের তালাশে খোরাসান, মিসর, শাম, ইরান ও হেজায সফর করেন এবং মুসলিম, তিরমিযী ও কেরমানীর ন্যায় বিখ্যাত ইমামগণের নিকট হাদীস শিক্ষা করেন। শায়খ বোন্দার বলেন, বর্তমান দুনিয়ায় চার জন হাদীসের হাফেয রহিয়াছেন: (১) বুখারায় মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল (২) রায় শহরে আবু যুরআ (৩) নিশাপুরে মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ এবং (৪) সমরকন্দে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান। ইমাম বুখারী দারেমীর মৃত্যু সংবাদে কাঁদিয়া দিয়াছিলেন। তাহার কিতাব 'সুনান' হাদীসের একটি সহীহ কিতাব। অনেকে বলেন, “ইবনে মাজাহ'র স্থলে 'সুনানে দারেমী'কেই 'ছেহাহ ছিত্তাহর অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
১১। ইমাম দারা কুতনী (রঃ) [৩০৫৩৮৫ হিঃ মোঃ ১১৮–৯৯৫ ইং]
ইমাম আবুল হাসান আলী ইবনে ওমর দারা কুতনী ৩০৫ বা ৩০৬ হিজরীতে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বসরা, কুফা, ওয়াসেত, শাম ও মিসর ঘুরিয়া এলম হাসিল করেন। আবু সাঈদ ইস্তাখরী তাহার ফেকাহ, হাদীস, তফসীর এবং আরবী সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট উস্তাদ। হাফেয আবু নোআইম, আবু বকর বিরকানী, জাওহারী, আবু তাইয়্যেব তাবারী ও হাকেম আবু আব্দুল্লাহ্ নিশাপুরীর ন্যায় ব্যক্তিগণ তাহার শাগরিদ ছিলেন। হাকেম এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, দারা কুতনীর মত লোক দারা কুতনী নিজেও দেখেন নাই। আলেমগণ বলেন, দারা কুতনীর ন্যায় হাদীসের জারহ ও তাদীল বিশেষজ্ঞ মুহাদ্দেস তাহার পর আর কেহ জন্মগ্রহণ করেন নাই। তাঁহার 'সুনানে কুবরা' হাদীসের একটি মশহুর কিতাব।
ইমাম বায়হাকী (রঃ) [৩৮৪–৪৫৮ হিঃ মোঃ ৯১৪–১০৬৬ ইং
ইমাম আবু বকর আহমদ ইবনে হোসাইন বায়হাকী খোরাসানের বায়হাক নামক স্থানে জন্ম গ্রহণ করেন এবং নিশাপুরে ইন্তেকাল করেন। তিনি হাদীসের একজন বিশিষ্ট ইমাম ছিলেন। তিনি নানা বিষয়ে প্রায় এক হাজার কিতাব রচনা করিয়াছেন। 'সুনানে কুবরা', 'দালায়েলুন নবুওত', (دلائل النبوة) শোআবুল ঈমান' প্রভৃতি তাহার হাদীসের প্রসিদ্ধ কিতাব।
আলেমগণ বলেন: মোতাআখখেরীন বা পরবর্তী লোকদের মধ্যে সাত ব্যক্তির রচনা দ্বারা মুসলিম জাহান অধিকতর উপকৃত হইয়াছে। (১) দারা কুতনী, (২) হাকেম আবু আদুল্লাহ্ নিশাপুরী, (৩) আবু মুহাম্মদ আবদুল গনী মিসরী, (৪) আবু নোআইম ইস্পাহানী, (৫) হাফেয ইবনে আবদুল বারর, (৬) আবু বকর বায়হাকী ও (৭) খতীব বাগদাদী। বায়হাকীর সমানায় খোরাসানে পূর্ণ দক্ষতা ব্যতীত কেহই হাদীস বর্ণনা করিতে সাহস করিত না।
১৩। ইমাম রাযীন (রঃ) [খৃঃ ৫২৫ হিঃ মোঃ ১২৩০ ইং]
১৪। ইমাম নববী (র:) [৬৩১–৬৭৬ হিঃ মোঃ ১২৩৩ – ১২৭৭ ইং]
আবু যাকারিয়া ইমাম মুহীউদ্দীন ইয়াহ্ইয়া ইবনে শারফ হেজাযী নববী (নাওয়ারী) দামেশকের নিকটবর্তী 'নাওয়া' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। কুরআন পাকের হিফয শেষ করিয়া তিনি দামেশকে আগমন করেন এবং সমস্ত জীবন তথায় এলমের অন্বেষণ ও জ্ঞানচর্চায় অতিবাহিত করেন। সংসারী হইবার তাহার কোন সুযোগ ঘটে নাই। তিনি অতি কঠোর জীবন যাপন করিতেন। দিন-রাত্রের মধ্যে তিনি একবার মাত্র পানাহার করিতেন। তিনি অতি ধীরস্থির ও গম্ভীর প্রকৃতির লোক ছিলেন। শরীআতের আহকামের অবমাননা তিনি কখনও বরদাশত করিতে পারিতেন না। তিনি হাদীসশাস্ত্র ও শাফেয়ী ফেকাহশাস্ত্রের বহু মূল্যবান কিতাব লিখিয়া গিয়াছেন। হাদীসে তাঁহার 'আরবাঈন' ও 'শরহে মুসলিম' বিখ্যাত কিতাব।
১৫। ইমাম ইবনে জাওযী (রঃ) [৫১০৫১৭ হিঃ মোঃ ১১১৬– ১২০০ ইং)
ব্যাখ্যায় যেসকল কিতাব হইতে সাহায্য গ্রহণ করা হইয়াছে
১। আশে অ্যাতুল লুম আত শরহে মেশকাত শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলবী (রঃ)।
২। তালীকুস সবীহ-শরহে মেশকাত- মাওলানা ইদ্রীস কান্দলবী।
৩। মাযাহেরে হক—নওয়াব কুতবুদ্দীন খাঁ দেহলবী।
৪। ফাহুল বারী — শরহে বুখারী — হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ)।
৫। আইনী — শরহে বুখারী বদরুদ্দীন আইনী (রঃ)।
৬। ফয়যুল বারী শরহে বুখারী – আনওয়ার শাহ্ কাশ্মীরী (রঃ)।
৭। ফাতহুল মুলহিম — শরহে মুসলিম — মাওলানা শিব্বীর আহমদ ওসমানী (রঃ)।
৮। হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ শাহ ওলীউল্লাহ্ দেহলবী (রঃ)।
৯। এহ্ইয়াউল উলুম—ইমাম গাযালী রঃ।
অনুবাদকর্মে অনুসৃত নীতিমালাঃ
১। হাদীস প্রধানত আইনবিষয়ক। আর আইনের শব্দাবলী হয় গণাগাথা – মাপাজোখা— যাহার একটা মাত্র আকার বা ইকারের বেশ কমই আইনের উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করিয়া দিতে পারে। এজন্য অনুবাদে যথাসম্ভব শাব্দিক পদ্ধতির অনুসরণেরই চেষ্টা করা হইয়াছে, অথচ ভাষাকে তরজমা-গন্ধহীন ও সাবলীল করার জন্য স্বাধীন পদ্ধতির অনুসরণই আবশ্যক ছিল।
২। অনুবাদকে অর্থবোধক করার উদ্দেশ্যে যেখানে কোন শব্দ বা বাক্য বাড়াইতে হইয়াছে— যাহাতে উহা মূল হাদীসের সহিত মিশিয়া না যায়, এবং হাদীসের আসল শব্দ কি তাহা নিঃসন্দেহে বুঝা যায়, এইজন্য সাধারণত উহাকে বন্ধনীর মধ্যে রাখা হইয়াছে।
৩। ব্যাখ্যা ব্যতীত অনুবাদ অনেক ক্ষেত্রে হাদীসের অর্থ প্রকাশের পক্ষে যথেষ্ট নহে; বরং কোন কোন ক্ষেত্রে ভুল বুঝাবুঝিরই কারণ হয়। অতএব, ইহাতে প্রায় হাদীসের পরই উহার আবশ্যক ব্যাখ্যা দেওয়া হইয়াছে।
৪। হাদীসের ব্যাখ্যায় 'মুতাকাদ্দেমীন' বা পূর্ববর্তীদের কোন মত পাওয়া গেলে সর্বদা উহার অনুসরণ করা হইয়াছে। কারণ, দ্বীনের কথা বুঝার ব্যাপারে তাহারা আমাদের অপেক্ষা অনেক বিজ্ঞ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিয়াছেন : “সর্বাপেক্ষা উত্তম যুগ হইল আমার যুগ (অর্থাৎ, সাহাবীদের যুগ)। অতঃপর ইহাদের পরে যাহারা আসিবেন তাহাদের যুগ (তাবেদীনদের যুগ)। অতঃপর তাহাদের পরে যাঁহারা আসিবেন তাহাদের যুগ (তাবে-তাবেয়ীনদের যুগ)।” ইহাতে বুঝা গেল যে, দ্বীনের ব্যাপারে প্রত্যেক পূর্ববর্তী যুগই উহার পরবর্তী যুগ অপেক্ষা উত্তম।
৫। ইসলাম ও বৈদিক ধর্ম যেমন এক নহে, উভয়ের ধর্মীয় পরিভাষাও এক নহে। এ কারণে ইসলামী পরিভাষাসমূহের তরজমা বৈদিক শব্দে করা হয় নাই। যথা—'ঈমান' ইহার তরজমা "বিশ্বাস" দ্বারা করা হয় নাই। কারণ, 'বিশ্বাস' শব্দ সাধারণ। অপরপক্ষে ঈমান' কতিপয় বিশেষ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসেরই নাম। তাই হাদীসে বর্ণিত ঈমান শব্দের তরজমা যথাসম্ভব ঈমানই রাখা হইয়াছে। এরূপে 'রোযা' ও 'উপবাসের পরিত্যাজ্য বিষয় ও সময় এক নহে বলিয়া উপবাস দ্বারা 'রোযা' (সওম)-এর তরজমা করা হয় নাই এবং নামাযের অনুবাদও 'উপাসনা' দ্বারা করা হয় নাই। কারণ, উপাসনা সাধারণ এবং নামায এক বিশেষ পদ্ধতিতে উপাসনারই নাম।
৬। অপরিহার্য কারণে যেখানে আরবী বা পারসীর কোন নতুন শব্দ ব্যবহার করা হইয়াছে, সেখানে বন্ধনীতে উহার সম্ভাব্য বাংলা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হইয়াছে।
৭। আরবী, পারসী প্রভৃতি বিদেশী-মূল শব্দসমূহের বানানে সাধারণত প্রচলিত উচ্চারণের প্রতিই লক্ষ্য রাখা হইয়াছে। যথা— ফেকাহ, শরাহ, মুসলমান, মুহাম্মদ আল্লাহ্ ও কুরআন।
৮। হাদীসের ব্যাখ্যা সম্পর্কে আমি ছেহাহ ছিত্তার বিভিন্ন শরাহ্ (শরহ) যথা—বুখারী শরীফের শরাহ্ 'ফাতহুল বারী', 'আইনী' ও 'ফয়যুল বারী, মুসলিম শরীফের শরাহ্ নববী' ও 'ফাতহুল মুলহিম'। আবু দাউদের শরাহ 'বাযলুল মাজহুদ' এবং মেশকাত শরীফের শরাহ 'তা'লীকুস সাবীহ' প্রভৃতি আলোচনা করিয়া এ সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে, সকল কিতাবের দীর্ঘ আলোচনায় যাহা রহিয়াছে, শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলবীর 'মেশকাতের' পারসী তরজমা ও শরাহ 'আশেঅ্যাতুল লুমআত'-এ সংক্ষেপে তাহাই রহিয়াছে; বরং কোথাও কোথাও ইহাও দেখা যায় যে, সেসকল কিতাবে যাহা অমীমাংসিত রহিয়াছে, ইহাতে তাহারও মীমাংসা রহিয়াছে। এ কারণে আমি হাদীসের তরজমা ও ব্যাখ্যায় বরাবর ইহারই অনুসরণ করিয়াছি।